ছোলতান । ‘বাংলা সাহিত্য ও মুসলমান’


  • 06 Jan 2025

    #digitaltextarchiveবাংলা 

    %e0%a6%9b%e0%a7%8b%e0%a6%b2%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a5%a4-%e2%80%98%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%b9%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%af-%e0%a6%93
    Share
     

    তথ্যবিন্দু: বাংলা ভাষা-সাহিত্য

    ১৯০২ সালে শুরু হয় সোলতান পত্রিকা এবং ১৯১০ সালে পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়। নবপর্যায়ের যাত্রা শুরু হয় খুব সম্ভবত ১৯১৪-১৫ সাল নাগাদ। নবপর্যায়ে পত্রিকা শিরোনামের বানান পরিবর্তন করে নাম রাখা হয় ছোলতান

    প্রকল্পPeriodicalDB-তে সাপ্তাহিক পত্রিকা ছোলতানের (নবপর্যায়) ৪টি সংখ্যার উদ্ধৃতাংশ রচনাসূচী সংযোজন করা হয়েছে।

    ।। ৪৩৩ entries ।।

    ০০০৮ : ০০৫ । ২৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩০ (Jun 1923)

    ০০০৮ : ০১৬ । ১৪ ভাদ্র, ১৩৩০ (Aug 1923)

    ০০০৮ : ০৪৩ । ১ চৈত্র, ১৩৩০ (Mar 1924)

    ০০০৯ : ০১৪ । ২০ ভাদ্র, ১৩৩১ (Sep 1924)

    এই ৪টি সংখ্যা থেকে তৎকালীন বঙ্গীয় ও বৃহত্তর মুসলিম সমাজ, খিলাফত আন্দোলন, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন, কৃষি-জমি, আঞ্চলিক ব্যবসা ইত্যাদি সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া সম্ভব।

    ছোলতান পত্রিকার একটি নিয়মিত বিভাগ ছিল ‘সাহিত্য স্বরূপ’। এই বিভাগে বর্ষ ৮ এর ৪৩ সংখ্যায় (১লা চৈত্র, ১৩৩০) প্রকাশিত হয় মতিলাল দাশের (বি. এ.) লেখা ‘বাংলা সাহিত্য ও মুসলমান’। লেখাটির সাথে প্রকাশিত হয় তৎকালীন সম্পাদক আলী আহমদ ওলী এছলামাবাদীর একটি প্রত্যুত্তর। প্রত্যুত্তর ও প্রবন্ধটি ছোলতান পত্রিকার বানান রীতি (বাংলা ভাষা-সাহিত্য), বাংলা সাহিত্যে ধর্মীয় ধারাপথ—এই বিষয়ে গবেষণার জিজ্ঞাসা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক তথ্য।

    প্রকল্পPeriodicalDB-তে বর্তমানে ৩২টি পত্রিকার নির্বাচিত সংখ্যার রচনাসূচী আছে। Coding-এর মাধ্যমে অভিন্ন বিষয়ের রচনাগুলিকে বিষয়ভিত্তিক নিশানা দেওয়া হচ্ছে। বাংলা ভাষা-সাহিত্য—বর্তমানে এই বিষয়ে ১০৮টি রচনার কালানুক্রমিক তালিকা পাওয়া যাবে।


    বাংলা সাহিত্য ও মুসলমান

    ছোলতান ৮:৪৩ (১লা চৈত্র, ১৩৩০), পৃ: ৭-৮।

    ধারাবাহিক বিভাগ: সাহিত্য স্বরূপ

    মতিলাল দাস বি. এ.

    আজকাল আমাদের মুসলমান ভ্রাতৃগণ বাংলা সাহিত্যের সেবায় মনোনিবেশ করিয়াছেন। বাংলা ভাষা বাঙালীর ভাষা—বাঙালী হিন্দু মুসলমান উভয়ের ভাষা। দুই সহোদরই যদি মায়ের বাণীর চরণে ভক্তি পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন, তাহা পরমানন্দের বিষয়। কিন্তু আমার মনে হয় কোন কোন বিষয়ে তাঁহারা ভুল পথে অগ্রসর হইতেছেন। এ বিষয়ে আমি আমার মুসলমান ভ্রাতৃগণের সস্নেহ দৃষ্টি আকর্ষণ করি। যদি কোন বিষয়ে আমার ভুল ধারণা থাকে, সে ধারণা তাঁহারা দূর করিলেই সুখী হইব।

    সাহিত্য সাৰ্ব্বজনীন। সৌন্দর্য্য ও প্রকৃতির ভোগায়তনের উপর মানুষের আত্মার অনুভূতি সাহিত্য-কুসুমের স্তবক রচনা করে। যাহা মঙ্গল, যাহা সুন্দর সাহিত্য হৃদয় দিয়া তাহা গ্রহণ করে। দেশ, কাল, পাত্র সাহিত্যের মাঝে বৈচিত্র্য ফুটাইয়া তুলে, তারতম্যের প্রাচীর গড়িয়া তুলে না। বাংলা ভাষার স্ফটিকনিৰ্ম্মল জলে বিশ্ব সাহিত্যের সুষমার ছায়াপাত হউক, এ আশা আমরা সকলেই করি। কিন্তু বিশিষ্ট সাহিত্যের এক একটা বৈশিষ্ট্য থাকে, তাহা নষ্ট করা যায় না। তাহা নষ্ট করিলে সে সাহিত্য তার জীবনীশক্তি হারায়। আমাদের মুসলমান ভ্রাতৃগণ যদি আরবী ও পারস্য ভাষার প্রস্ফুট শতদল সমূহের মধু আহরণ করিয়া বাংলায় ছড়াইতেন, তাহা হইলে বাংলা ভাষা মধুমান হইত, আর তাহাদের চেষ্টাও সাৰ্থক হইত। কিন্তু এ বিষয়ে তাহাদের দৃষ্টি প্রখর নয়। তাহারা শুধু এতদিন ধরিয়া বাংলা ভাষা আরব্য ও পারস্য ভাষার যে সকল শব্দরাজী আহরণ করিয়া নিজস্ব করিয়া লইয়াছিলেন, তাহার রূপান্তর করিতে ব্যস্ত, কিংবা কোন পারস্য আরব্য বা উর্দ্দু, ভাষার ‘বকুনী’ ঝাড়িয়া ভাষাকে জবরজং ও অবোধ্য করিয়া তুলিতে ব্যস্ত। মনীষি ও লব্ধপ্রতিষ্ঠ সাহিত্যিকগণ যে সব শব্দ যে ভাবে বহু বৎসর ধরিয়া classic বা মর্য্যাদা সম্পন্ন করিয়া তুলিয়াছেন, যে সব শব্দ আজ তাঁহারা কেন যে নূতন আকারে গড়িতেছেন তাহার হেতু বুঝিতে পারি না। ‘মুসলমান’ শব্দটী সকলেই ব্যবহার করেন, উহা বলিলে উহার উদ্দিষ্ট জাতি—সকলে বুঝেন, তবে অকারণে কেন উহাকে ‘মোছলমান’ করিতে যাইব? প্রতিবাদী হয়ত বলিবেন— উহার মূল রূপ ঐ—কিন্তু হ’ক, বাংলা ভাষায় তাহাতে কিছুই আসে যায়না। বাংলা ভাষায় ‘মুসলমান’ শব্দ আছে, বাংলা ভাষা তাহাই ব্যবহার করিবে। তারপর জনসাধারণের দুর্ব্বোধ্য বা অবোধ্য পারসীক বা উর্দ্দু শব্দ বিনা প্রয়োজনে আমদানী করা কেন হয়, তাহার কারণ জানি না। ভাষার যাহাতে প্রসার হয়, বৃদ্ধি হয়, প্রত্যেক হিতৈষী ব্যক্তি নিশ্চয়ই তা কামনা করেন। যে সকল ভাব, যে সকল রীতি প্রকাশ করিবার উপযোগী শব্দ ভাষায় নাই—তাহা প্রথমতঃ ঐ ভাষার ধাতু সংযোজনে গড়িতে পারা যায় কিনা, দেখিতে হইবে। যদি না হয়, তখন অন্য ভাষা হইতে ঐ সব ভাব বা রীতি প্রকাশক শব্দসম্পৎ গ্রহণ করিতে একটা হইবে। সে ভাষা উর্দ্দু হ’ক, পারসী হ’ক, আরবী হ’ক কিংবা ইংরেজী, ফ্রেঞ্চ, জার্ম্মান হ’ক তাহাতে ক্ষতি নাই। এ বিষয়ে বাংলার উপন্যাস-সম্রাট মনস্বী বঙ্কিমচন্দ্রের উপদেশাবলী প্রত্যেক সাহিত্যিক ও পাঠককে স্মরণ করিতে বলি। তবে একটা কথা আছে—বাংলা ভাষা সংস্কৃতমূলক। তাই ভাবের অভাব তাহার বড় একটা হয় না। বাংলা ভাষার এই সংস্কৃত ভাষার পন্থানুসরণ সহ্য করিতে না পারিয়া যদি কোন অত্যুগ্র মুসলমান ভ্রাতা মুসলমানী বাংলা ভাষা সংগঠন করিতে বসেন—তাহাতে উভয় জাতিরই সমূহ ক্ষতি হইবে। আর হিন্দু মুসলমানের এই মিলন দিনে—এইরূপ একটানা পক্ষপাতিত্ব যিনি দেখাইবেন, তিনি জাতীয়তার তরুমূলকেই ছিন্ন করিবেন। তারপর বর্ত্তমান মুসলমান সাহিত্যিকদিগের গ্রন্থ অনেক সময় ঈর্ষা বা দ্বেষবিজৃম্ভিত। ইহা সজীব প্রাণের লক্ষণ নহে। তাঁহাদের অনেকের ধারণা যে হিন্দুগণ তাঁহাদের সাহিত্যক প্রচেষ্টার প্রতি সস্নেহ দৃষ্টিপাত করেন না। এ ধারণা তাঁহাদের ভুল। কবি কাজী নজরুল ইসলাম সকলেরই প্রিয়পাত্র। অথচ তিনি মুসলমান জাতির প্রাচীন ঐতিহাসিক, ভাব ও ছন্দ অবলম্বন করিয়া বহু কবিতা লিখিয়াছেন। সাহিত্যিকের খ্যাতি বা প্রীতি প্রাপ্তির কারণ—সাহিত্যিক শক্তি। সে শক্তি যাঁহার আছে তিনি কখনই অনাদৃত হইবেন না।

    হিন্দু রচিত কয়েকটী উপন্যাস ও নাটকে মুসলমানকে নাকি খাটো করিয়া দেখান হইয়াছে, এ চীৎকার বহুদিন শোনা যাইতেছে। কিন্তু আমার মুসলমান ভ্রাতৃগণ যেন মনে রাখেন, সে সব নাটক বা উপন্যাস সমগ্র বাঙ্গালী জাতির স্বাদেশিকতার উচ্ছ্বাস। সে স্বাদেশিকতা, যাঁহারা বাঙ্গালী তাঁহাদের। আর তাহার উপর ইতিহাসকে ক্ষুণ্ণ করিয়া কোন পুস্তকে কোন হিন্দু মুসলমানকে ছোট করিয়াছেন এ ধারণা আমার নাই। আর এ ছাড়া, তাহারা বহু সবল, ধর্ম্মপরায়ণ—মানুষের মতন মানুষ—এমনও অনেক মুসলমান চরিত্র অঙ্কন করিয়াছেন।

    এই সব কথা মনে করিয়া আমাদের মুসলমান ভ্রাতৃগণ — হাফেজ, সাদি প্রভৃতির সৌন্দর্য্য ও সুধা বাঙ্গালা ভাষায় আনয়ন করুন। নবজাগ্ৰত যুবক মুসলমানদের কাছে সমগ্র বাঙ্গালী তাহাই আশা করিতেছে।

    (ছোলতান সম্পাদকের প্রত্যুত্তর)

    সাহিত্যের আদর্শ সম্বন্ধে লেখক যে উচ্চ ধারণা পোষণ করেন, তাতে আমরা তাঁর সহিত সম্পূর্ণ একমত। বাঙ্গালা সাহিত্যের প্রতি মোছলমানদের উপস্থিত কৰ্ত্তব্য সম্বন্ধে তিনি যাহা বলিয়াছেন, তারও অধিকাংশ কথাই আমরা অনুমোদন করি। কিন্তু বানান ও ভাষা সম্বন্ধে তিনি যাহা বলিয়াছেন, আমাদের ধারণা, সেগুলি বিশেষ ভাবিয়া বলিবার অবসর পান নাই। সুতরাং আমরা সে সম্বন্ধে গুটীকতক কথা নিবেদন করিব।

    (১) মোছলমান সাহিত্যিকগণের কেহ কেহ ইদানীং ‘মুসলমান’ না লিখিয়া ‘মোছলমান’ লিখিয়া বানান সংস্কার করিবার চেষ্টা করিতেছেন। ইহাকে লেখক মহাশয় শক্তির নিছক অপব্যবহার বলিয়া মনে করেন কিন্তু আমরা তা মনে করি না। ভাষা ও বানান সংস্কারের প্রচেষ্টা সাহিত্যেরই সজীবতার লক্ষণ। আরবী, ফারছী শব্দ সম্বন্ধে মোছলমানগণের, মধ্যে সংস্কার-স্পৃহা জাগিবার পূর্ব্বেই রবীন্দ্রনাথ হইতে রায় বাহাদুর যোগেশচন্দ্র রায় পর্য্যন্ত অনেকেই ভাষা ও বানান সংস্কারের চেষ্টা করিয়া আসিতেছেন। সংস্কৃতজাত বাঙ্গালা শব্দ গুলির পুরাতন বানান পরিত্যাগ করিয়া নূতন রকম বানান করা সম্ভব ও ন্যায়সঙ্গত হইলে আরবী ও ফারছী শব্দগুলির মূল উচ্চারণ ঠিক রাখিবার জন্য এক আধটুক বানান সংস্কার কি অনায় হইবে? পরন্তু ইহা এতই আবশ্যক যে, অধ্যাপক শ্রীযুক্ত পদ্মনাথ ভট্টাচাৰ্য্য এম. এ. মহাশয় প্রমুখ সাহিত্যিকগণ এ ব্যাপারে মোছলমানগণের ঔদাসীন্যের জন্য বহুবার দুঃখ প্রকাশ করিয়াছেন। অধ্যাপক শ্ৰীযুক্ত সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় তাহার ‘আরবী ও ফারছী শব্দের লিপ্যন্তর’ নামক সাহিত্য-পরিষদ পত্রিকায় প্রকাশিত সন্দর্ভে এ বিষয়ের আবশ্যকতা, উপযোগিতা ও উপায় সম্বন্ধে বহু জ্ঞাতব্য কথা বলিয়াছেন। বস্তুত ‘মোছলমান’ (Musalman) শব্দটীকে হিন্দু ভ্রাতৃগণ এবং সেই সঙ্গে অনেক অজ্ঞ মোছলমান যে আজ ‘মুষলমান’ (Mushalman) উচ্চারণ করিয়া থাকেন, ইহার কারণ, আমরা এতদিন শব্দটীকে লিখিবার সময় লিখিতাম ‘মুসলমান’। সংস্কৃতে ‘স’ ইংরেজী S এর উচ্চারণের মত, এ কথা ঠিক। কিন্তু বঙ্গদেশে উহার সঙ্গে ‘শ’ ও ‘ষ’ কোন উচ্চারণ ভেদ নাই। সেই জন্য মোছলমানী শব্দগুলির মূল উচ্চারণ ঠিক রাখিবার জন্য আমরা ‘স’ হলে ‘ছ’ ব্যবহারের প্রচলন করিতে চাই। অনেকে বলিতে পারেন, ‘ছ’র উচ্চারণ ইংরেজী ‘S’ এর মত কোমল নহে। সুতরাং ‘ছ’ দিয়া ‘মোছলমান’ লিখিলে, অনেকেই ‘Muchhalman’ পড়িবে। কিন্তু তা ঠিক নহে। ‘ছ’এর মূল উচ্চারণ কোমল নহে বটে, কিন্তু বাঙ্গালার প্রায় সৰ্ব্বত্রই ‘ছ’ ইংরাজী S এর মত উচ্চারিত হয়। কাজেই আমাদের বিশ্বাস ও অভিজ্ঞতা এই যে, ‘ছ’ দিয়া ‘মোছলমান’ লিখিলে বই পুস্তকে অ-মোছলমানগণ যাহাই বলুন না কেন, উচ্চারণ করিবার সময় তাঁরা—অন্ততঃ জনসাধারণ ঠিক উচ্চারণ করিবেনই। এই জন্য আমরা বানান সংস্কারের পক্ষপাতী।

    (২) লেখকের দ্বিতীয় কথা এই যে জন সাধারণের দুর্ব্বোধ্য ও অবোধ্য আরবী ফারছী উর্দ্দু শব্দের আমদানী করিয়া ভাষাকে অনর্থক পীড়িত করা উচিৎ নহে। নিরর্থক শব্দ আনার বিরোধী আমারাও। কিন্তু শব্দ সম্পদ বাড়ানও কি একটী ‘অর্থ’ নহে? বাল্যকালে অনেক কিছুই দুর্ব্বোধ্য থাকে, বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই ক্রমে সে দুর্ব্বোধ্যতা কাটিয়া যায়। কোমল, শ্রুতিমধুর শব্দ দুর্ব্বোধ্যই হোক আর অবোধ্যই হোক, যোগ্য লেখকের হাত দিয়া বাহির হইলে অতি অল্পদিনেই সহজ বোধ্য হইয়া পড়ে, এ বিষয়ের প্রমাণের অভাব নাই। লেখক কাজী নজরুল এছলামের প্রশংসা করিয়াছেন। অথচ কাজী ছাহেবের এক ‘অগ্নিবীণাতেই’ যত দুৰ্ব্বোধ্য, অবোধ্য (অবশ্য হিন্দু-ভাইদের কাছে) আরবী, ফারছী শব্দ ঢুকানো হইয়াছে, অন্য সমস্ত মোছলমান গ্রন্থকারের বই পুস্তকের আরবী ফারছী শব্দ একত্র করিলেও তার সমান হইবে না। তথাপি কোনও রকম বিরক্তি প্রকাশ না করিয়া হিন্দু-ভ্রাতৃগণ যে অখণ্ড মনোযোগে ‘অগ্নিবীণার’ ফুটনোট মুখস্ত করিতেছেন, ইহাতেই লেখক বুঝিবেন, প্রয়োগ করিবার ক্ষমতা থাকিলে দুর্ব্বোধ্য ফারছী উর্দ্দু শব্দ প্রয়োগ তত দোষনীয় নহে।

    (৩) হিন্দুগণ মোছলমান বিদ্বেষ মূলক পুস্তক রচনা করেন, কথাটা এ যুগের নহে। এ লইয়া লেখক বৃথা নাড়াচাড়া করিয়াছেন। মোছলমান বিদ্বেষী সাহত্যিক বলিতে মোছলমানেরা প্রধানতঃ বঙ্কিমবাবুকেই নির্দ্দেশ করিয়া থাকে। বঙ্কিমবাবুর ‘বাংলার ইতিহাস’, ‘বাঙ্গালার বাহুবল’ প্রভৃতি প্রবন্ধ পাঠ করিলেই লেখক মোছলমানদের ক্ষোভের কারণ বুঝিতে পারিবেন। কিন্তু তার প্রতিশোধ লইবার জন্য হিন্দু-বিদ্বেষ বিজৃম্ভির পুস্তকাদি রচনার আমরা ঘোর বিরোধী। আজকাল যে সব উদার হিন্দু লেখকগণ আদর্শ মোছলেম চরিত্র আঁকিবার ও মোছলমানের সত্য ইতিহাস উদ্ধার করিবার চেষ্টা করিতেছেন, তারা মোছলমানদের ভক্তি ও কৃতজ্ঞতার পাত্র।


    প্রকল্পPeriodicalDB-র অন্যান্য পত্রিকা সংগ্রহ

    প্রকল্পPeriodicalDB-তে প্রতিমাসে বিভিন্ন বাংলা পত্রিকার রচনাসূচী সংযোজিত হচ্ছে। এই website-এর মাসিক subscription মূল্য দিনপ্রতি ₹৫ হিসাবে ₹১৫০।

     

    Share